নবাব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী
কুমিল্লা জেলার,লাকসাম উপজেলার অন্তগর্ত পশ্চিমগাঁও, (সে সময়ের হোমনাবাদ পরগনা), জমিদার সমাজকর্মী লেখিকা ভাষা আরবি, ফার্সি বাংলা ও সংস্কৃত শিক্ষা পারিবারিক গৃহ শিক্ষকের মাধ্যমে আরবি, ফার্সি বাংলা ও সংস্কৃত ভাষায় ব্যুৎপত্তি অর্জন উল্লেখযোগ্য পুরস্কার ১৮৮৯ সালে মহারাণী ভিক্টরিয়ার নির্দেশক্রমে ‘নওয়াব’ উপাধি
নওয়াব ফয়জুন্নেসা চৌধুরানী ছিলেন দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম মহিলা নওয়াব। তিনি সমাজ সংস্কারের অংশ হিসেবে মেয়েদের শিক্ষার প্রতি জোর প্রচেষ্ট করেন। ১৭৮৩ সালে (বেগম রোকেয়া’র জন্মের সাত বছর পূর্বেই) নারী শিক্ষা প্রসারের লক্ষ্যে তিনি মেয়েদের জন্য কুমিল্লায় একটি বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। উপমহাদেশের বেসরকারিভাবে প্রতিষ্ঠিত মেয়েদের প্রাচীন স্কুলগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম। দেশে বিদেশে শিক্ষার প্রচারে তার অবদান অনস্বীকার্য। নওয়াব ফয়জুন্নেসা ( পশ্চিমগাঁয়ে) একটি অবৈতনিক মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। মাদ্রাসার ছাত্রদের অন্য একটি ছাত্রাবাসও ছিল। মাদ্রাসার ভালো ফলাফলে উৎসাহিত হয়ে পরবর্তিকালে তার (ফয়জুন্নেসার) বংশধরগণ ১৯৪৩ খ্রী.এটিকে উচ্চ মাধ্যমিক ইসলামিক কলেজ রূপান্তরিত করেন। ১৯৬৫ খ্রী. কলেজটি একটি ডিগ্রী কলেজে রূপান্তরিত হয়ে নওয়াব হয়ে নওয়াব ফয়জুন্নেসা ডিগ্রী কলেজ নামে অখ্যায়িত হয় । ১৯৮২ খ্রী. এ কলেজটির সরকারিকরণ হয় এবং নাম হয় নওয়াব ফয়জুন্নেসা সরকারি কলেজ। তাছাড়া তিনি আর তার কন্যা বদরুন্নেসা পশ্চিমগাঁওয়ে নওয়াব ফয়জুন্নেসা সরকারি কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। মেয়েদের উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার জন্য তিনি সব সময় উৎসাহিত করতেন। তিনি মেয়েদের জন্য হোস্টেলের ব্যবস্থা করেছিলেন। তার জমিদারির আয় থেকে মেয়েদের জন্য নির্মিত এ হোস্টেলের সব খরচ বহন করা হতো। মেয়েদের জন্য মাসিক বৃত্তির ব্যবস্থাও তিনি করেছিলেন।তিনি পবিত্র মক্কা শরিফে মাদ্রাসা–ই–সওলাতিয়া ও ফোরকানিয়া সহ বিভিন্ন শিক্ষামূলক প্রতিষ্ঠানে প্রচুর পরিমানে সহায়তা করেন। হিন্দু–মুসলমান নির্বিশেষে তিনি সমস্ত নারীর জন্যই চিন্তা ও কাজ করে গেছেন। জেলার উন্নয়নে কুমিল্লার তদানীন্তন ম্যাজিস্ট্রেট ডগলাস জমিদারদের কাছে ঋণ চাইলে তিনি তাড়াতাড়ি টাকা দান হিসেবে প্রেরণ করেন। শিক্ষা বিস্তারের সঙ্গে সঙ্গে তিনি মেয়েদের স্বাস্থ্য রক্ষা ও সুচিকিৎসারও ব্যবস্থা করেন। ১৮৯৩ সালে কুমিল্লা শহরে প্রতিষ্ঠা করেন ‘ফয়জুন্নেসা জানানা হাসপাতাল’। ১৮৯৩ সালে নওয়াব বাড়ির কাছেই তিনি মেয়েদের জন্য একটি স্বতন্ত্র হাসপাতাল নির্মাণ করেছিলেন। তিনি ১৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়,অনেকগুলো দাতব্য প্রতিষ্ঠান,হাসপাতাল,এতিমখানা এবং সড়ক নিমার্ণ করে তার মানবতাবাদী ও সমাজ সংস্কারের অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। তিনি নওয়াব বাড়ীর সদর দরজায় একটি দশ গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেন। ১৮৯৪ সালে পবিত্র হজ্ব পালন করার সময় তিনি মক্কায় হাজীদের জন্য একটি মুসাফিরখানাও প্রতিষ্ঠা করেন। আমাদের এদেশে তখন ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন বিদ্যমান ছিল। নওয়াব ফয়জুন্নেসা সরকারি জনহিতকর কাজেও প্রচুর অর্থ দান করতেন।
১৯০৩ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
প্রিয় সুহৃদ,
মানুষের মৌলিক অধিকারের মধ্যে শিক্ষা অন্যতম। সুশিক্ষা ছাড়া কোন জাতি উন্নতি সাধন করতে পারে না। তাই অর্থবহ ও কল্যাণমুখী শিক্ষার মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীদের সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ ঘটিয়ে দেশপ্রেমিক,চরিত্রবান ও আদর্শ নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার মহান উদ্দেশ্য নিয়েই এই প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। শিক্ষার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে সরকারের পাশাপাশি দীর্ঘদিন থেকে এই প্রতিষ্ঠান শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে এবং শিক্ষার মান উন্নয়নের অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে।সেই সাথে যুগোপযোগী শিক্ষা বিস্তারের লক্ষ্যে সম্পূর্ণ আধুনিকায়নের মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীদের মেধা বিকাশে অত্র প্রতিষ্ঠানটি অঙ্গীকারবদ্ধ। নারী জাগরণের অন্যতম মহিয়সী ভারতীয় উপমহাদেশের একমাত্র মহিলা নবাব ফয়জুন্নেছা চৌধুরাণীর হাতে গড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান “নবাব ফয়জুন্নেছা ও বদরুন্নেছা যুক্ত উচ্চ বিদ্যালয়ে” ১৯০১ সালে প্রতিষ্ঠিত।আমাদের দক্ষ পরিচালনায়, শিক্ষকদের নিরলস শ্রমে ছাত্র-ছাত্রীদের মেধা ও মানোন্নয়নে এ প্রাঙ্গণ হয়ে উঠুক তথ্য প্রযুক্তি এবং যুগোপযোগী শিক্ষা বিস্তারের নিরাপদ সোনালী ভবিষ্যৎ বিনির্মাণের সর্বশ্রেষ্ঠ আদর্শ বিদ্যাপীঠ। এই বিদ্যালয়ের ছত্র-ছাত্রীদের লেখাপাড়া স্বার্থে ইতোমধ্যে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশে সরকারের স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয়ের মাননীয় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এমপি মহোদয় চার তলা বিশিষ্ট একাডেমিক ভবন নির্মাণ থেকেশুরু করে সকল ক্ষেত্রে সহযোগিতা করছেন। এজন্য আমরা সকলে মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়ের নিকট কৃতজ্ঞ। বিগত বছরের ন্যায় শিক্ষা ক্ষেত্রে সফলতা অর্জনে সংশ্লিষ্ট সকলের আন্তুরিক সমর্থন,সুচিন্তিত মতামত কামনা করছি। আমার দৃঢ় বিশ্বাস শিক্ষক,অভিভাবক ও ছাত্র-ছাত্রীদের সমন্বয়ে আমরা শিক্ষার প্রতিটি ক্ষেত্রে ভালো ফলাফল বয়ে আনতে পারো।আল্লাহ আমাদের সহায় হোন। সকলকে ধন্যবাদ।
প্রধান শিক্ষকের বাণী,
১৯০১ সালে প্রতিষ্ঠিত নবাব ফয়জুন্নেছা ও বদরুন্নেছা যুক্ত উচ্চ বিদ্যালয় এর ধারাবাহিক সাফল্যে এলাকাবসীর দাবী ও শিক্ষার্থীদের চাহিদার প্রেক্ষিতে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানটি বর্তমানে কুমিল্লা জেলার অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিনত হয়েছে। এটি প্রতিষ্ঠানের পরিচালকবৃন্দ, শিক্ষকবৃন্দ, অভিভাবকবৃন্দ, শিক্ষার্থীদের ও সর্বোপরি এলাকাবাসীর সমন্বিত প্রচেষ্টার ফল। এলাকাবাসীর সেবার মনোভাব নিয়ে মান সম্পন্ন শিক্ষা প্রসারে এবং কৃতিত্বপূর্ণ ফল অর্জন করে এই প্রতিষ্ঠানটি ইতিমধ্যে একটি স্থান করে নিয়েছে।
প্রতিষ্ঠানের সার্বিক ক্ষেত্রে সফলতার জন্য মানুষের মাঝে এক ধরনের চাহিদা সৃষ্টি হওয়ায় তাঁরা তাঁদের কোমলমতি ছেলে মেয়েদের এই প্রতিষ্ঠানে পড়াশুনা করাতে যথেষ্ট আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। প্রতিষ্ঠানের সাফল্যে অভিভাকগণের মধ্যে ইতিবাচক প্রভাব ছাড়াও বিভিন্ন পর্যায়ে বেশ প্রসংশনীয় অবদান রাখছে। সবকিছুর মূলে রয়েছে প্রতিষ্ঠানের অটুট শৃঙ্খলা, শিক্ষকগণের একাগ্রতা, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকগণের মধ্যে সমন্বয় সাধন। শিক্ষার্থীদেরকে উপযুক্তভাবে গড়ে তোলাই আমাদের লক্ষ্য। এই লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য আমাদের রয়েছে বিরামহীন চেষ্টা ও পরিকল্পনা।
১৯০১ সালে প্রতিষ্ঠিত নবাব ফয়জুন্নেছা ও বদরুন্নেছা যুক্ত উচ্চ বিদ্যালয় এর ধারাবাহিক সাফল্যে এলাকাবসীর দাবী ও শিক্ষার্থীদের চাহিদার প্রেক্ষিতে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানটি বর্তমানে কুমিল্লা জেলার অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিনত হয়েছে। এটি প্রতিষ্ঠানের পরিচালকবৃন্দ, শিক্ষকবৃন্দ, অভিভাবকবৃন্দ, শিক্ষার্থীদের ও সর্বোপরি এলাকাবাসীর সমন্বিত প্রচেষ্টার ফল। এলাকাবাসীর সেবার মনোভাব নিয়ে মান সম্পন্ন শিক্ষা প্রসারে এবং কৃতিত্বপূর্ণ ফল অর্জন করে এই প্রতিষ্ঠানটি ইতিমধ্যে একটি স্থান করে নিয়েছে।
প্রতিষ্ঠানের সার্বিক ক্ষেত্রে সফলতার জন্য মানুষের মাঝে এক ধরনের চাহিদা সৃষ্টি হওয়ায় তাঁরা তাঁদের কোমলমতি ছেলে মেয়েদের এই প্রতিষ্ঠানে পড়াশুনা করাতে যথেষ্ট আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। প্রতিষ্ঠানের সাফল্যে অভিভাকগণের মধ্যে ইতিবাচক প্রভাব ছাড়াও বিভিন্ন পর্যায়ে বেশ প্রসংশনীয় অবদান রাখছে। সবকিছুর মূলে রয়েছে প্রতিষ্ঠানের অটুট শৃঙ্খলা, শিক্ষকগণের একাগ্রতা, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকগণের মধ্যে সমন্বয় সাধন। শিক্ষার্থীদেরকে উপযুক্তভাবে গড়ে তোলাই আমাদের লক্ষ্য। এই লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য আমাদের রয়েছে বিরামহীন চেষ্টা ও পরিকল্পনা।